Basic Computer

বেসিক কম্পিউটার শিখতে কি কি জানতে হয়?

বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদের কম্পিউটারের মূল বিষয়গুলো জানতে হবে। মৌলিক কম্পিউটার দক্ষতা আয়ত্ত করতে আমাদের যা জানা দরকার তা জানা আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, আজকাল অফিসের যেকোনো কাজের জন্য কম্পিউটার দক্ষতা অপরিহার্য। আপনি যদি বেসিক থেকে অ্যাডভান্স লেভেল পর্যন্ত কম্পিউটার শিখতে চান তবে কোর্সটি করতে পারেন।

আপনি একটি কম্পিউটার দিয়ে কি করতে পারেন না? অফিসের কাজ থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্স কাজ, স্কুলের জন্য বিজ্ঞান প্রকল্প তৈরি, বিভিন্ন ইভেন্টের ব্যানার তৈরি করার মতো অনেক কাজ কম্পিউটারে করা যায়। এবং আপনি যদি নির্দিষ্ট কম্পিউটার দক্ষতা আয়ত্ত করেন তবে আপনি আপনার সহপাঠীদের থেকে শতগুণ এগিয়ে থাকতে পারেন।

যাইহোক, আপনি যদি এই দক্ষতাগুলি শিখতে চান তবে আপনার একটি ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হবে। একটি ইন্টারনেট সংযোগ আপনাকে সারা বিশ্বের নেটওয়ার্কগুলিতে অ্যাক্সেস দেয়৷ এখন আপনার কাজ সহজ এবং আরো মজাদার হবে! পরীক্ষা দেওয়ার আগে পড়া যেমন জরুরী তেমনি কর্মী বাহিনীতে প্রবেশের আগে কম্পিউটার দক্ষতাও অপরিহার্য।

আসুন জেনেনি  কি কি বেসিক জানতে হবে আপনাকেঃ

বেসিক কম্পিউটার কোর্সে কি কি শেখানো হয় তা হল-

১. মাইক্রোসফট ওয়ার্ড

২. মাইক্রোসফট এক্সেল

৩. মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট

৪. বাংলা এবং ইংরেজি টাইপিং দক্ষতা

৫. ডকুমেন্ট তৈরি

৬. ইন্টারনেট ব্রাউজিং

৬. ওয়েব রিসার্চ

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডঃ

কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে। সহজ ভাষায়, শব্দ প্রক্রিয়াকরণ হল বাক্য লেখার প্রক্রিয়া। সব ধরনের নথির নকশা এবং নতুন নথি তৈরির কাজও হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে। আপনি Microsoft Word ব্যবহার করে বাংলা এবং ইংরেজি লেখার দক্ষতাও শিখতে পারেন। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা থাকলে আপনি এই ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে পারেন। অফিশিয়াল দায়িত্ব পালনেও কোনো অসুবিধা থাকবে না।

মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্টঃ

মাইক্রোসফট অফিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট। প্রধানত বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। একে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনও বলা হয়। উপস্থাপনা মানে উপস্থাপনা। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন সেমিনার, বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং সম্মেলনে, বক্তা কেবল পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তার মতামত জানাতে পারেন। এছাড়াও আপনি পাওয়ারপয়েন্ট দিয়ে আরও অনেক কিছু করতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ –

  • প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়
  • এটি দিয়ে বিষয়গুলি আলাদা আলাদা স্লাইডে লিখা যায়
  • স্লাইডে প্রয়োজন অনুসারে ডিজাইন দেওয়া যায়
  • স্লাইডগুলোকে একত্রে ফাইল করে রাখা যায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী প্রিন্ট করা যায়
  • প্রজেক্টরে স্লাইড শো করে প্রয়োজনীয় বিষয় উপস্থাপন করা যায়
  • মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট সম্পর্কে যদি আপনার আগে থেকে ধারণা থাকে, তাহলে উপর্যুক্ত কাজগুলি আপনি খুব সহজেই করতে পারবেন, যেটা চাকুরীক্ষেত্রে আপনার অনেক কাজে দেবে । যেমন ধরুন, আপনি আপনার বসকে নতুন একটি প্রজেক্ট আইডিয়া দেখাতে চান, সেক্ষেত্রে মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট হতে পারে সেরা মাধ্যম ।

মাইক্রোসফট এক্সেলঃ

মাইক্রোসফট অফিসের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মাইক্রোসফট এক্সেল । ডাটা নিয়ে কাজ করার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেলের কাজ জানা খুবই জরুরী । হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্টসের অনেক কাজের জন্য নির্ভর করতে পারেন মাইক্রোসফট এক্সেলের উপর । প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক হিসাব থেকে শুরু করে স্যালারী শিট এবং প্রতিদিনের হিসাব রাখার মতো কাজও করা যায় মাইক্রোসফট এক্সেলের সাহায্যে । সুতরাং, বুঝাই যাচ্ছে চাকুরী ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট এক্সেল সম্পর্কে জানা কতটা দরকারী । আপনি যদি আগেই এটি সম্পর্কে ধারণা রাখেন তাহলে চাকুরীক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই হিসাব নিকাশের কাজগুলি করতে পারবেন ।

এাছাড়াও আপনাকে জানতে হবে …..

বাংলা এবং ইংরেজি টাইপিং দক্ষতাঃ

মোবাইলে আমরা সবাই আরামসে টাইপ করতে পারলেও কম্পিউটার এর স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে একনাগাড়ে টাইপ করা কিন্তু একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার। টাইপ করার সাধারণ নিয়ম হচ্ছে ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে ৪০টি শব্দ এবং বাংলা ২৫টি শব্দ টাইপ করতে পারতেই হবে।

ডকুমেন্ট তৈরিঃ

কম্পিউটারের মাধ্যমে ডক ফাইল তৈরি করা হলো  আরেকটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার স্কিল। Microsoft Word ও Google Docs এর মাধ্যমে খুব সহজেই এবং বিনামূল্যে ফাইল তৈরি করা যায়। Microsoft Word হলো বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ডকুমেন্ট তৈরির সফটওয়্যার। ৯০% মানুষ নিজেদের কাজে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে থাকে।

ডকুমেন্ট ফাইলে শব্দ বড়-ছোট করা, হাইপার লিংক তৈরি করা, শব্দ বোল্ড, ইটালিক বিভিন্ন ফন্টে আনা, প্যারাগ্রাফ করা সহ আরো অসংখ্য ছোটখাটো স্কিল শিখে নেয়া খুব জরুরি। এই সফটওয়্যারগুলোর মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন ও নোট খুব সহজেই তৈরি করা যায়।  

Google এবং Office 365 অনলাইনেও ব্যবহার করা যায়। ফলে শুধু কম্পিউটারই নয়, এর মাধ্যমে মোবাইলেও যখন তখন লেখা এবং ফাইল এডিট করা যাবে। গুগল ডকে একই ফাইলে একাধিক মানুষের এক্সেস থাকলে তারা এডিটও করতে পারবে।

Graphic Designing:

আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছর জুড়েই কোনো না কোনো ইভেন্টের আয়োজন করা হয়৷ ইভেন্টের প্রচারণার জন্য প্রয়োজন ম্যাগাজিন, ব্যানার ও পোস্টার৷ আর আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইনের Adobe Photoshop আর Adobe Illustrator ব্যবহারে পারদর্শী হয়ে থাকো, তাহলে তোমাকে আর ঠেকায় কে? এসব কাজের জন্য সবার আগে কিন্তু তোমাকেই ডাকা হবে!

আজকাল যেকোনো কাজের জন্য এমন মানুষদের রিক্রুট করা হচ্ছে, যাদের ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর সম্পর্কে অন্তত সাধারণ জ্ঞানটুকু আছে। তাই বোঝা যাচ্ছে যে আজকাল এই দুটি সফটওয়্যারের কাজে পারদর্শী মানুষের চাহিদা কেমন।

Social Networking:

সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো হলো নেটওয়ার্কিংয়ের সবচেয়ে কার্যকরী জায়গা। কারণ এইসব সাইটগুলোতে আমরা নানান ধরণের ও পেশার মানুষের সাথে পরিচিত হই। এইসব মানুষেরা আমাদের পরবর্তীতে নানান উপকারে আসতে পারেন।

তবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং স্কিলসের মধ্যে তুমি কীভাবে কার সাথে কথা বলবে, নেগেটিভিটি কীভাবে এড়িয়ে চলবে- এগুলোও অন্তর্ভুক্ত।  

সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট এবং অ্যাপগুলো সবসময় মানুষের চেয়েও বেশি এক্টিভ থাকে! তবে এগুলো ব্যবহার করতে চাইলে খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। তাই শিক্ষার্থীরা প্রায় সবাই এগুলো ব্যবহার করে থাকে।

পড়াশোনা ছাড়া শিক্ষার্থীদের তেমন একটা কাজ থাকে না। তাই তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটায় এবং ধীরে ধীরে তারা এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো ব্যবহারের স্কিল এবং মেথডগুলো জানা জরুরি।

অনলাইনে কাজ করা:

আজকাল এমন অনেক ধরণের কাজ তৈরি হচ্ছে, যা ঘরে বসেই করা যায়। যেমন: freelancing, online business, blogging, marketing, copywriting, ইত্যাদি।  সেইসব কাজ করার জন্য প্রয়োজন নিজের ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ। তাই অনলাইনে কাজ করতে হলে কিন্তু কম্পিউটার স্কিল গুলো আয়ত্ত করার প্রয়োজন আছে!

রিসার্চ:

রিসার্চ অর্থ অনুসন্ধান করা। বিভিন্ন ওয়েব ব্রাউজারে কোনো বিষয় সার্চ দিয়ে তা নোট করাকেই রিসার্চ বলে৷ যেমন: কেন এইটা হয়? কী জন্য হয়? এটা হলে লাভটা কী?

রিসার্চ মানে এই না যে, শুধুই এসাইনমেন্টের জন্য ডাটা কালেক্ট করা। রিসার্চ অর্থ সত্য উদঘাটন করাও বটে! রিসার্চ তখনই করা লাগে, যখন কেউ কোনো সমস্যার সমাধান খোঁজে। কোনো প্রজেক্ট তৈরি করার জন্যেও রিসার্চ করা লাগে।

এই স্কিলগুলো অর্জন করলে তুমি তোমার সমবয়সীদের তুলনায় সব ক্ষেত্রেই বেশ এগিয়ে থাকবে। এইসব বিষয় অনেক সময় নিজে নিজেই শেখা যায়। আবার তুমি চাইলে এগুলো নিয়ে কোর্সও করতে পারো।

One thought on “বেসিক কম্পিউটার শিখতে কি কি জানতে হয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *